ঢাকাবৃহস্পতিবার , ১ মে ২০২৫
আজকের সর্বশেষ সবখবর

মে দিবস পালিত হচ্ছে ঠিকই কিন্তু শ্রমিকদের কি ভাগ‍্য বদলাচ্ছে? মোহাম্মদ আলী

ডেস্ক রিপোর্ট:
মে ১, ২০২৫ ১২:০৯ পূর্বাহ্ণ । ৯৪ জন
Link Copied!
স্বাধীন বিডি.কম পোস্ট অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

লেখক: মোহাম্মদ আলী
শিশু ও মানবাধিকার সংগঠক

১ মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস। শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সারা বিশ্বে পালিত এই দিনটির ইতিহাস প্রাচীন এবং গৌরবময়। ১৮৮৬ সালের ১ মে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরে শ্রমিকরা তাদের কর্মঘণ্টা, মজুরি ও নিরাপদ কর্মপরিবেশের দাবিতে ঐতিহাসিক আন্দোলন শুরু করেন। শ্রমিকদের এই সংগ্রাম ছিল শুধুমাত্র তাদের নিজেদের জন্য নয়, বরং পৃথিবীজুড়ে শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য একটি মাইলফলক। এই আন্দোলনই পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক মে দিবস হিসেবে পালিত হতে শুরু করে। কিন্তু এই দিবসের যে মুল লক্ষ্যে ছিলো তা আজও পুরোপুরি প্রতিপ্রলিত হয় নি। এখনো শ্রমিকরা তাদের ন‍্যায‍্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। কর্মঘন্টা, ন‍্যায‍্য মুজুরী, ছুটি সহ সকল অধিকার থেকে থেকে বঞ্চিত হয়ে মালিকদের কাছে শোষিত হচ্ছে। যে শ্রমিকদের কারণে বিশ্বের অর্থনীতির মাইল ফলক হচ্ছে সেই শ্রমিকরাই আজ অবহেলিত হচ্ছে। শ্রমিকদের শ্রমে মালিকরা বিদেশে গাড়ি বাড়ি এবং তাদের সন্তানদের বিলাসী জীবন যাপন উদযাপন করছে কিন্তু শ্রমিকরা তাদের ন‍্যায‍্য মজুরি ঠিক মতো না পেয়ে সংসারজীবন অতি মানবেতর ভাবে কাটাতে হচ্ছে। সন্তানদের ভালো স্কুলে পড়ানোর সুযোগ পাচ্ছে না। বেতন ভাতা বিভিন্ন কারখানায় আন্দোলন করতে হয়। আবার দেখা যায় অনেক কারখানায় ২/৩ মাস যাবত বেতন দিচ্ছে না ; সেই বেতনের জন্য আন্দোলন সংগ্রাম করতে হয় ; আর সেই আন্দোলন করতে গিয়ে অনেক শ্রমিক মৃত্যু বরণও করে। বিশেষ প্রতিটা কর্মক্ষেত্রে নারীরা সহিংসতা যৌন নির্যাতন সহ বেতন বৈষম্যের স্বীকার হয়। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক চালিকা শক্তির উৎস হলো পোশাক কারখানা ;আর কারখানার শ্রমিকরা প্রতিনিয়ত মালিকদের কাছে শোষিত হয়েই যাচ্ছে। কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকদের নিরাপত্তাব্যবস্থার অভাবে বিভিন্ন দূর্ঘটনার স্বীকার হয়ে অনেক শ্রমিক অকালে প্রাণ হারায়। যে উদ্দেশ্য ১৮৮৬ সালে শ্রমিক আন্দোলন হয়েছে সেটি আজও প্রতিফলিত হয় নি। আমরা শুধু দিবস আসলে শ্রমিকদের স্মরণ করি এরপর তাদের কথা ভুল যাই। তবে মে দিবস আমাদের শ্রদ্ধা ও সম্মান জানাতে শেখায় সেই সমস্ত শ্রমিকদের যারা ন্যায্যতার জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন। তাদের আত্মত্যাগের ফলস্বরূপ আজ আমরা ন্যায্য শ্রমের অধিকার ও মজুরি নিয়ে কথা বলতে পারি।”
– ন্যায্য মজুরি : শ্রমিকদের কাজের মূল্যায়ন হিসেবে উপযুক্ত এবং ন্যায্য মজুরি নিশ্চিত করতে হবে।
– নিরাপদ কর্মপরিবেশ : সকল শ্রমিকের জন্য নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা উচিত।
– স্বাস্থ্যসেবা সুবিধা : শ্রমিকদের জন্য স্বাস্থ্যসেবা, প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সুবিধা এবং উপযুক্ত আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
– নারী শ্রমিকদের অধিকার : নারী শ্রমিকদের জন্য মাতৃত্বকালীন ছুটি, বৈষম্যহীন কর্মপরিবেশ এবং সুরক্ষিত পরিবেশ তৈরি করতে হবে।
– শিশু শ্রম নিরসন : শিশুশ্রম বন্ধ করার জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
– অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিকদের জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা : অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিকদের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা ও সুরক্ষিত জীবনের ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে।

তিনি আরও বলেন, “শ্রমিকদের অবদান ছাড়া সমাজের উন্নয়ন অসম্ভব। তাদের প্রতি ন্যায্যতা ও সম্মান প্রদর্শন করা প্রতিটি নাগরিকের দায়িত্ব। তাই আমরা সবাই একসঙ্গে শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার রক্ষায় অবদান রাখব, যাতে শ্রমিকেরা সম্মানিত ও নিরাপদ জীবনযাপন করতে পারেন।”