আসাদুজ্জামান, স্টাফ রিপোর্টার
গাজীপুরের শ্রীপুরে প্রকাশ্যে পিস্তল উঁচিয়ে গুলি ছুড়ার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ ফেসবুক মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে ব্যাপক আলোরন সৃষ্টি হয়েছে। তেহিম মাদবর (১৮) নামের এক তরুণের গুলি ছোড়ার ভিডিও শনিবার ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। এক স্কুল ছাত্রীকে টুকরো টুকরো করে ফেলার হুমকিও দিয়েছে ওই তেহিম মাদবর।
অভিযোগ উঠেছে, ওই তরুণ স্থানীয় কিশোর গ্যাংয়ের লিডার। ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে পড়লে অনেকেই তাঁর বিরুদ্ধে নানা অপকর্মের অভিযোগ তুলেছেন। তবে তেহিমের ফেসবুক পেজে আপলোড করা গুলি ছোড়ার ভিডিওগুলো শনিবার দুপুর থেকে আর পাওয়া যাচ্ছে না। পুলিশ বলছে, গুলি ছোড়ার ভিডিওটি তাদের নজরে এসেছে। পুলিশের একাধিক টিম ওই তরুণকে আটক করতে মাঠে নেমেছে। তাঁকে আটকের পর গুলি ছুরার ভিডিওটির ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যাবে।
তেহিম উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ ধনুয়া গ্রামের আসাদুজ্জামান মাতবর জামাল ওরফে জামাল ডাক্তারের ছেলে। ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর পালিয়েছেন তিনিও।
স্হানীয় কলিম উদ্দীন মাতবর জানান, দুদিন আগে সঙ্গীদের নিয়ে তার চুরি করে তেহিম। এ ঘটনায় তেহিমের সাথে তার ঝগড়া হয় এবং পিস্তল দিয়ে মেরে ফেলার ভয় দেখাই তাকে। পরে বিষয়টি নিয়ে পারিবারিকভাবে মীমাংসায় বসে তারা। এর পরও তেহিম কলিমকে হুমকি দিয়ে বলে তার স্কুল পড়োয়া মেয়েকে টুকরো টুকরো করে হত্যা করা হবে, এমনি তার মেয়ের এক টুকরো মাংসও খুঁজে পাওয়া যাবে না।কলিম উদ্দীন তেহিমের ভয়ে পরিবারের নিরাপত্তা নিয়ে ভয়ে থাকার কথা জানান।
ওই ভিডিওতে দেখা যায়, একটি বিল্ডিংয়ের ছাদে ফুলহাতা কালো শার্ট পরা তরুণ আকাশের দিকে তাক করে ডান হাতে পিস্তল থেকে গুলি ছুড়ছেন। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, তেহিম মাতবর তাঁর একটি কিশোর গ্যাংয়ের নেতৃত্ব দেয়। এলাকায় জমি দখল থেকে মারামারি, ছিনতাই, চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্ম করে বেড়ায় তেহিম মাতবর ও তাঁর গ্যাংয়ের অন্য সদস্যরা। তাঁরা জানান, গার্মেন্টেসে চাকরি করার সুবাদে এই এলাকায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের লোকজন বসবাস করেন। দূরদূরান্তের এসব লোকজন ভয়ে তাঁর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ তুলেন না। নানা ধরনের নির্যাতনের শিকার হলেও চুপ থাকেন। স্থানীয় বাসিন্দারা আরও জানান, আজ তেহিমের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর অনেকে তাঁদের সঙ্গে হওয়া নির্যাতনের কথা জানাচ্ছেন। ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর তেহিমের পরিবারের সব সদস্য বাড়িতে তালা লাগিয়ে পালিয়েছেন।
এদিকে গুলি ছোড়ার ভিডিওর ব্যাপারে শ্রীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মুহম্মদ আব্দুল বারিক বলেন, ‘বিষয়টি নজরে আসার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশের একাধিক সিভিল টিম পাঠানো হয়েছে। ওই এলাকায় আপাতত অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আটকের চেষ্টা চলছে। তদন্ত জানা গেছে গুলি ছোড়ার ঘটনাটি আরও দু তিন মাস আগের।